বিজয়নগর সাম্রাজ্য || Vijayanagar Kingdom

সঙ্গম বংশ : 1336 খ্রিস্টাব্দে সঙ্গম নামে এক ব্যক্তির পাঁচ পুত্র তুঙ্গভদ্রার তীরে বিজয়নগর সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন। সঙ্গমের 5 পুত্রের মধ্যে হরিহর ও বুক্কই উল্লেখযোগ্য ছিলেন। তাদের নেতৃত্বেই উত্তরে তুঙ্গভদ্রা থেকে দক্ষিনে তিরিচিনপল্লি পর্যন্ত বিজয়নগরের আধিপত্য বিস্তৃত হয়। বুক্কের রাজত্বকাল থেকে বাহমনী রাজ্যের সঙ্গে বিজয়নগরের সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এই বংশের রাজা প্রথম দেবরায় তুঙ্গভদ্রা নদীতে বাঁধ নির্মাণ করেন। ইতালিও পর্যটক নিকোলো কন্টি তার রাজত্বকালে ভ্রমণ করেন। দ্বিতীয় দেব রায় ছিলেন সঙ্গম বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ নরপতি। পারসিক রাষ্ট্রদূত আব্দুর রাজ্জাক তার রাজসভায় এসেছিলেন।

সালুভ বংশ : দেব রায়ের উত্তরাধিকারীদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে 1486 খ্রিস্টাব্দে বিজয়নগরে সালুভ বংশ প্রতিষ্ঠিত হয়। সালুভরা মাত্র 19 বছর রাজত্ব করেন।

তুলুভ বংশ : 1505 খ্রিস্টাব্দে বীর নরসিংহ বিজয়নগরে তুলুভ বংশ প্রতিষ্ঠা করেন। এই বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ রাজা ছিলেন কৃষ্ণদেব রায়। তিনি বিষ্ণুর উপাসক ছিলেন। তার রাজনৈতিক চিন্তা ধারা তেলেগু ভাষায় ‘আমুক্ত মাল্যদা' গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেন। সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে অভিনব ভোজ, অন্ধ্র পিতামহ এবং অন্ধ্র ভোজ নামেও তিনি পরিচিত ছিলেন। তার রাজসভা ‘অষ্ট দিগগজ' নামে 8 জন সুধী ব্যক্তি দ্বারা অলংকৃত ছিল। ‘অষ্ট দিগগজ' এর শ্রেষ্ঠ ‘দিগগজ’ বিখ্যাত তেলেগু কবি পোদ্দান তার সভাকবি ছিলেন। পোদ্দানকে “অন্ধ্র কবিতার পিতামহ” ( তেলেগু কাব্যের পিতামহ ) বলা হয়। পোদ্দনের লেখা কাব্যগ্রন্থের নাম ‘মনুচরিতম' । দিগগজ তেনালিরাম ‘পান্ডুরঙ্গ মহামাত্যম' নামে গ্রন্থটি লেখেন। কৃষ্ণদেব রায় নাগালাপুরম নামে একটি শহর নির্মাণ করেন এবং এখানে হাজারা মন্দির এবং ভিথলস্বামী মন্দির দুটি নির্মাণ করেন। পর্তুগিজ পর্যটক নুনিজ রাজা অচ্যুত রায়ের সময় আসেন। এই বংশের শেষ সম্রাট সদাশিব তাঁর মন্ত্রী রামরায়ের হাতের পুতুল ছিলেন। 1565 খ্রিস্টাব্দে সদাশিব বিজাপুর, গোলকুণ্ডা, আহম্মদ নগর ও বিদর রাজ্যের সম্মিলিত বাহিনীর বিরুদ্ধে তালিকোটার যুদ্ধে অবতীর্ণ হন । এই যুদ্ধে রাম রায় নিহত হন এবং সদাশিব পরাজিত হন। 1570 খ্রীষ্টাব্দে রাম রায়ের ভাই তিরুমল সিংহাসন দখল করে আরবিডু বংশ প্রতিষ্ঠা করেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url